ষাটের দশকে মা’র্কিন নৌবাহিনীর আবহাওয়াবিদ হিসেবে সুদূর অ্যান্টার্কটিকায় গিয়েছিলেন পল গ্রিশাম। নির্জন বরফাচ্ছন্ন এলাকায় দায়িত্বপালনকালে একদিন নিজের মানিব্যাগ হারিয়ে ফেলেন তিনি। এরপর কে’টে গেছে পাঁচ দশকেরও বেশি।
আশ্চর্যজনকভাবে এতদিন পরে অনেকটা অক্ষত অবস্থাতেই গ্রিশামের হাতে ফিরে এসেছে সেই মানিব্যাগটি। ৯১ বছর বয়সী সাবেক এ নৌকর্মক’র্তা বলেন, আমি পুরো ‘হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম।
আমাকে শনাক্ত করে কাছে পৌঁছানোর দীর্ঘ ধা’রাবাহিক এ প্রক্রিয়ায় বহু মানুষ জড়িত ছিলেন। গ্রিশামের হারানো মানিব্যাগটিতে ছিল তার নৌবাহিনীর আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স,
বিভিন্ন ধরনের হা’মলার সময় কী করতে হবে তার একটি পকেট নির্দেশিকা, বিয়ার রেশন পাঞ্চ কার্ড, ট্যাক্স স্টেটমেন্ট এবং স্ত্রীর কাছে পাঠানো মানিঅর্ডারের র’শিদ। ৫৩ বছর পর সেগু’লো মোটামুটি অক্ষত অবস্থাতেই ফিরে পেয়েছেন এ বৃ’দ্ধ।
জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অ’ঙ্গরাজ্যের ডগলাসে বড় হয়েছেন পল গ্রিশাম। তিনি মা’র্কিন নৌবাহিনীতে যোগ দেন ১৯৪৮ সালে। প্রথমে আবহাওয়া প্রযুক্তিবিদ এবং পরে আবহাওয়ার পূর্বাভাসকারী হন গ্রিশাম।
১৯৬৭ সালে ‘অ’পারেশন ডিপ ফ্রি’ নামে একটি মিশনের অংশ হিসেবে অ্যান্টার্কটিকায় পাঠানো হয় তাকে। সেসময় তার বয়স ছিল ত্রিশের ঘরে।
সান ডিয়েগোর ইউনিয়ন-ট্রিবিউনকে গ্রিশাম বলেন, ‘আমি বাধ্য হয়েই সেখানে গিয়েছিলাম।’ একপর্যায়ে মানিব্যাগ হারিয়ে ফেলেন তিনি, একসময় সেটার কথা ভুলেও যান।
২০১৪ সালে অ্যান্টার্কটিকার রস দ্বীপের ম্যাকমুর্ডো স্টেশনের একটি ভবন ভাঙার সময় খুঁজে পাওয়া যায় গ্রিশামের মানিব্যাগটি। তবে সেটি মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া বেশ কঠিন ছিল। এর জন্য অসংখ্য ইমেইল, ফেসবুকের মেসেজ আর চিঠি চালাচালি করেছেন এক দল তরুণ।
স্টিফেন ডিকাটো, তার মেয়ে সারা লিন্ডবার্গ এবং ব্রুস ম্যাকি স্পিরিট অব ’৪৫ নামে একটি দাতব্য সংস্থার সদস্য। তারা আগে এক নৌ কর্মক’র্তার কাছে হারানো ব্রেসলেট ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এছাড়া, ডিকাটো একটি সংস্থায় কাজ করেন, যারা অ্যান্টার্কটিকায় গবেষণা করে থাকে।
ডিকাটোর সাবেক বস জর্জ ব্লেইসডেল ব্রেসলেট কাহিনী শুনে তাদের কাছে ম্যাকমুর্ডোর ভবনে পাওয়া দু’টি মানিব্যাগ তুলে দেন। লিন্ডবার্গ নৌ আবহাওয়া পরিষেবা অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে পল গ্রিশামক খুঁজে বের করেন।
দ্বিতীয় মানিব্যাগের মালিকেরও সন্ধান বের করেছেন তারা। অবশ্য ওই ব্যক্তি ২০১৬ সালে মা’রা গেছেন। একারণে মানিব্যাগটি তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান